বাবুল খাঁন, বান্দরবান: [৩]  র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) এবং ডিজিএফআই যৌথ অভিযানে বান্দরবানের রুমা উপজেলার বেতেল পাড়া থেকে অস্ত্রধারীদের হাত থেকে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করা হয়। 

[৪] বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. দিদারুল আলম। তিনি বলেন, নেজাম উদ্দীন সুস্থ আছেন। তাকে জেলা সদরে নিয়ে আসা হচ্ছে। 

[৫] উল্লেখ্য, উদ্ধারের আগে বৃহস্পতিবারই বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজারকে ছাড়াতে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।

[৬] বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

[৭] তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ব্যাংক ম্যানেজারকে অক্ষত ও নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। এজন্য নানান কৌশলে কাজ করছে র‌্যাব। ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তার পরিবারের কথা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি সুস্থ আছেন। তার অবস্থান শনাক্তে কাজ করছে র‌্যাব।

[৮] চুক্তিভঙ্গ করায় আলোচনা স্থগিত করল শান্তি কমিটি: এর আগে বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি কমিটির আলোচনা স্থগিতের ঘোষণা দেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্টা কমিটির আহব্বায়ক ক্য শৈ হ্লা।

[৯] বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

[১০] তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য ২০২৩ সালের ২৯ মে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অরুণ সারকী টাউন হলে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৯ জুন স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফ এর মধ্যে কয়েক দফা ভার্চুয়াল মিটিং এর পর উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সরাসরি সংলাপে বসার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়।

[১১] ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর  এবং পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৫ মার্চ  দু'দফা সরাসরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সংলাপে কেএনএফ এর সকল প্রকার সশস্ত্র কার্যক্রম হতে বিরত থাকা ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত দু'টি সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়। কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। কমিটির তরফ থেকে এ বিষয়টির ব্যাপারে বারবার অবগতি করা হলেও তারা কর্ণপাত করেনি তারা। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় জনগণের  উপর হামলা,চাঁদাবাজি, অপরহণসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে গেছে।

[১২] সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল রুমায় তারাবী নামাজীদের উপর বর্বরোচিত হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে হামলা, অর্থ লুটের উদ্দেশে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া এবং ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়বাসীদের জিম্মি করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও দু'টি ব্যাংক লুট করে কেএনএফ সদস্যেরা। 

[১৩] এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান তিনি। কয়েক দফায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় কুকি-চিনের সাথে শান্তি কমিটির সকল শান্তি আলোচনা স্থগিতের ঘোষনা দেন তিনি। সম্পাদনা: ইকবাল খান